বই নোটঃ সত্যের সাক্ষ্য
সত্যের সাক্ষ্য
লেখকঃ সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
অনুবাদঃ মুহাম্মদ নূরল ইসলাম
বই পরিচিতিঃ—
সত্যের সাক্ষ্য বইটি মূলত ১৯৪৬ সালের ৩ শে ডিসেম্বর, পাকিস্তানের শিয়ালকোটের মুরাদপুর নামক স্থানে সাধারণ সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তৃতার একাংশ।
ভূমিকাঃ—
মুসলিম জাতির দায়িত্ব ও কর্তব্য ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক ভাবে।
দায়িত্ব পালনের উপায়
মূল আলোচনা আবার দুই ভাগে বিভক্তঃ—
১. আমাদের তথা মুসলিম জাতির দায়িত্ব ও কর্তব্য
২. দাওয়াত প্রতিষ্ঠা করণ
▣ আল্লাহর প্রশংসা/মুকরিয়া
▣ দরুদ
▣ সম্মেলনের উদ্দেশ্যে দাওয়াত
আমাদের দাওয়াত দু’ধরনের মানুষের নিকটঃ—
১. বংশগত যারা মুসলমান
২. বংশগত যারা অমুসলমান
মুসলমানের দায়িত্বঃ—
১. যে বিষয়ের উপর ঈমান আনা হয়েছে, তার সাক্ষীরুপে দুনিয়াবাসীর সামনে হাজির হওয়া।
২. মুসলমান স্বতন্ত্র।
৩. সমস্ত মানুষের সামনে পুরাপুরি সত্যের সাক্ষি হয়ে দাড়ানো।
সত্যের সাক্ষ্য কি?ঃ—
আল্লাহর পক্ষ থেকে নবীদের মাধ্যমে যে সত্যের সাক্ষ্য এসেছে তার সরল সোজা পথ সম্বন্ধে দুনিয়ার সামনে তাকে তুলে ধরা।
সাক্ষ্যদানের বিষয়ঃ—
▣ দ্বীনের সত্যতার সাক্ষ্য,
▣ যথার্থ সত্যতার সাক্ষ্য,
▣ নবী আগমনের উদ্দেশ্য।
সাক্ষ্যদানের গুরুত্বঃ—
১. সাক্ষ্যদানের গুরুত্ব অপরিসীম ইহার ভিত্তি করে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে হিসাব নিকাশ এবং পুরস্কার বা শাস্তি দানের ব্যবস্থা করেছেন।
২. আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও মেহেরবান, তিনি মানুষকে এমন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাস করবেন না যা সে অবগত নয় এবং তার জন্য তাকে শাস্তির যোগ্য করবেন না।
৩. আর আল্লাহ যুগে যুগে নবী রাসূলদের মাধ্যমে মানবকে জানিয়ে দিয়েছেন যে কোন জিনিস আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় এবং কোন জিনিস অপছন্দনীয় অর্থাৎ কোনটি গ্রহনীয় ও কোনটি বর্জণীয়।
মোট কথাঃ—
▣ দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে জবাব দিতে হবে।
▣ এজন্য সতর্ক কারী প্রেরণ।
চুড়ান্ত প্রচেষ্টাঃ—
▣ আল্লাহ নবীদের দ্বারা একাজ করান।
▣ মানুষের নিকট জবাবদীহির অনুভুতি।
জবাব দীহিঃ—
১. নবীদের অনুসারীরা একজাত।
২. নবীদের অবর্তমানে উম্মতের উপর নবীদের দায়িত্ব (সত্য সাক্ষ্যদানের) অর্পিত।
৩. দায়িত্ব পালনের অবহেলা করলে জবাবদীহি করতে হবে নিজে মানুষের জন্য।
সাক্ষ্য দানের পদ্ধতিঃ—
▣ মৌথিক সাক্ষ্য
▣ বাস্তব সাক্ষ্য
মৌখিক সাক্ষ্য দানঃ—
১. মৌখিক সাক্ষ্য হচ্ছে নবীর মাধ্যমে আমাদের নিকট যে সত্য এসে পৌঁছেছে বক্তৃতা ও লিখিত মাধ্যমে দুনিয়ার সামনে তাকে তুলে ধরা।
২. আল্লাহর দ্বীন সম্পর্কে যুক্তি প্রমাণের দ্বারা সত্যতা প্রমাণ করে সকল বিপরীত মতাদর্শ গুলোর অসত্যতা প্রমাণ করতে। অর্থাৎ মানুষকে বুঝা বার ও তাদের মনে প্রবেশ করার সম্ভব্য সকল প্রচেষ্টা চালানো।
৩. সমগ্র মুসলিম জাতি সে সমস্ত মানুষকে হেদায়াতের পথ দেখানোর জন্য নবীদের ন্যায় চিন্তা ভাবনা করবে, সে পর্যন্ত এ মৌখিক সাক্ষ্য দানের দায়িত্ব পুরোপুরি পালন হবে না।
৪. সকল দিক ও বিভাগে এই মহান সত্যের শিক্ষাকে পেশ করা।
৫. বিপরীত মতাদর্শের ত্রুটি নির্দেশ করা।
৬. সত্যের সাক্ষ্যকে সকল কাজের কেন্দ্রীয় লক্ষ্যের পরিণত করা এবং সত্যের বিপরীত সাক্ষ্যদান কারীর কোন আওয়াজকে বরদাস্ত করা যাবে না।
বাস্তব সাক্ষ্যঃ—
▣ বাস্তব জীবনে সত্যের প্রচার প্রতিফলন।
▣ জীবন্ত মুসলিম হতে হবে অনুসরনের ক্ষেত্রে সত্যের প্রতিমুর্তি।
▣ মুসলিম সমাজের নমুনা তৈরী।
মৌখিক সাক্ষ্য বিশ্লেষণঃ—
১. মুসলমানদের বর্তমান সাধারণ সাক্ষ্য ইসলামের প্রতিকালে।
২. ভূ—স্বামীরা আদালত, শিক্ষা, সাহিত্য, প্রচার মাধ্যম, ব্যবসা—বাণিজ্য, নেতা, জনগন— সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, তাদের মুখে দুনিয়াবী কাজ করবার এর চর্চা ব্যতিত অন্য কোন আলোচ্য বিষয় নেই, তারা এমন কোন ধর্মের সাথে সম্পর্কিত নয় যারা আলোচনা্ কিছু সময় ব্যায় করতে পারে।
৩. অনুরূপভাবে আমাদের সাহিত্যিকগণ সাক্ষ্য দান করেছেন যে, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ফ্রান্স ও রাশিয়ার ধর্মবিমুখ নাস্তিক সাহিত্যিকদের যা আদর্শ তাদের আর্দশও তাই এবং মুসলিম সাহিত্যিক হিসেবে তাদের সাহিত্যের কোন স্বতন্ত্র মর্মবাণী নেই।
❏ বাস্তব সাক্ষ্য বিশ্লেষণঃ—
▣ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া মৌখিক সাক্ষ্যের তুলনায় এ অবস্থা আরো শোচনীয়।
▣ জাহিলিয়াতই প্রাধান্য পাচ্ছে।
▣ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সতিতি রাজনৈতিক।
❏ সত্য গোপনের শাস্তিঃ—
ক. ইহকালীন ও পরকালীন শাস্তি। খ. মুসলমানদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়া।
গ. মুসলমানদের নির্যাতিত হওয়া। ঘ. জালিম শাসক চাপিয়ে দেওয়া।
ঙ. শয়তান আমাদের অন্তরে আশ্রয় নেয়া।
❏ নতুন ফিরকাঃ চারভাগে বিভক্তঃ—
১. দ্বীনের সাথে সম্পর্কহীন কোনকিছুকে দ্বীনের মধ্যে শামিল করা———মাপকাঠি হিসেবে গ্রহণ করা।
২. কোন মাসয়ালাকে কুরআন সুন্নাহর চাইতে গুরুত্ব দেওয়া।
৩. ইজতেহাদী বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা।
৪. কোন ব্যাক্তিকে নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা।
মুসলমানদের সমস্যাঃ—
১. আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা না করা।
২. সৎ লোক না থাকা।
৩. আল্লাহর পথে প্রকৃত দ্বায়ী না থাকা।
৪. জোর আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধকারী না থাকা।
সমস্যার সমাধানঃ—
১. আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠাকারী তৈরি করা।
২. সৎ লোক তৈরি করা।
৩. আল্লাহর পথে ডাকার জন্য যোগ্য দ্বায়ী থাকা।
৪. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান কারী সংগঠন তৈরি করা।
আমাদের উদ্দেশ্যঃ—
জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামকে মেনে নিয়ে মুসলমান হিসেবে দ্বীন ইসলামকে প্রতিষ্ঠা ও সত্যের সাক্ষ্যদানই আমাদের জীবনের মুক্ষ্য উদ্দেশ্য।
Jajakillah
Sukria
JAZAKALLAH